নির্বাচন নয়, আগে ন্যায়বিচার ও সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আগে প্রয়োজন সুবিচার এবং কার্যকর রাজনৈতিক সংস্কার। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বিচার ও সংস্কার নিশ্চিত না করে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।

শনিবার (৩১ মে) দুপুরে কিশোরগঞ্জ পুরাতন স্টেডিয়ামে জামায়াতে ইসলামীর জেলা পর্যায়ের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, “যারা তড়িঘড়ি করে নির্বাচন আয়োজন করতে চায়, তারা যেন বিগত নির্বাচনগুলোর দিকে তাকায়। সেই নির্বাচনগুলো প্রমাণ করেছে, দেশে কতটা প্রয়োজন বিচার ও সংস্কারের। কোনো ধরনের কাঠামোগত পরিবর্তন ও বিচার ছাড়াই নির্বাচনের আয়োজন মানে এক ধরনের প্রহসন। তাই আমরা বলছি, বিচার এবং সংস্কারের পরেই নির্বাচন হতে পারে, তার আগে নয়।”

তিনি আরও বলেন, “যারা বিচার ব্যবস্থাকে নিজেদের ইচ্ছেমতো পরিচালনা করেছে, নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করেছে, তাদের অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। অবিচারের নামে বিচার চালিয়ে যারা অন্যায় করেছে, তাদের বিচারের মুখোমুখি করা সময়ের দাবি।”

আলোচনার একপর্যায়ে তিনি বিচার ব্যবস্থার সুসংহত কাঠামোর ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, “সত্যিকারের বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের বিবেক জাগ্রত করতে হবে। এটিএম আজহারের রায়ের মাধ্যমে দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার একটি দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। যারা অন্যায়ভাবে প্রাণ দিয়েছেন, আমরা তাদের জন্য দোয়া করি; আল্লাহ যেন তাদের জান্নাত নসিব করেন। তবে যারা সেই অন্যায়ের পেছনে ছিল, তাদের বিচারও সময়মতো হতে হবে।”

দেশের রাজনীতিতে দ্রুত নির্বাচনের দাবি উঠলেও তিনি বলেন, “অনেকেই না বুঝে বা আবেগে পড়ে দ্রুত নির্বাচন চাইছে। কিন্তু প্রস্তুতি ও কাঠামোগত সংস্কার ছাড়া তড়িঘড়ি করে নির্বাচন দিলে তা প্রকৃত নির্বাচন হবে না বরং তা জাতির জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। আমরা যে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন করেছি, সেই সংগ্রাম যেন ব্যর্থ না হয়, সে জন্যই আমরা সচেতন অবস্থান নিয়েছি।”

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন কিশোরগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমীর ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য অধ্যাপক রমজান আলী। আরও বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও প্রচার সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের পরিচালক ড. মাওলানা মো. ছামিউল হক ফারুকী এবং ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।

কর্মী সম্মেলনে জেলার ১৩টি উপজেলার নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। পুরো মাঠ জুড়ে দলের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের বক্তব্যে স্পষ্ট, জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান এখন ন্যায়বিচার ও সাংবিধানিক সংস্কারের পক্ষে, যেখানে অবিচার ও ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে একটি সংগঠিত অবস্থান নেওয়া হচ্ছে। দলটির দাবি, নির্বাচন নয়, আগে দেশে সুবিচার প্রতিষ্ঠা হোক।#জামায়াত_ইসলামী #বিচার_আগে_নির্বাচন_পরে #অধ্যাপক_মুজিবুর #রাজনীতি #বাংলাদেশ_নির্বাচন #সংস্কার_ও_বিচার #কিশোরগঞ্জ_সম্মেলন

Post a Comment

Previous Post Next Post