বর্তমান সরকারের উদ্দেশে বিএনপি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে—তারা আর বেশি সময় দেবে না। সর্বোচ্চ আরও দুই মাস সময় দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দলটি বলেছে, এই সময়ের মধ্যেই নির্দলীয় ও সুষ্ঠু নির্বাচনের রোডম্যাপ না এলে রাজনৈতিক ময়দানে সক্রিয় হবে তারা।
সম্প্রতি দলটির শীর্ষ নেতারা এক বৈঠকে বসেন, যেখানে তারা সরকারকে চাপ প্রয়োগের কৌশল এবং গণতন্ত্র রক্ষায় পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেন। সেখানে কয়েকজন নেতা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন নিশ্চিত করতে আন্দোলনের পক্ষেও মত দেন। তবে সক্রিয় আন্দোলনের জন্য এখনও পরিস্থিতি ‘পরিপক্ব’ নয় বলে অভিমত দেন অনেকে।
বৈঠকে উপস্থিত নেতারা বলেন, দেশের বর্তমান প্রশাসন জনগণের আন্দোলনের ফলাফল, তাই তাদের প্রতি এখনো একটা প্রত্যাশা রয়েছে। বিএনপি মনে করে, সরকার দ্রুত একটি সঠিক ও বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ দিয়ে দেশকে নির্বাচনের পথে এগিয়ে নেবে। তা না হলে গণতন্ত্র আবারও হুমকির মুখে পড়বে এবং আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের সুযোগ পাবে, যা জাতীয় রাজনীতিতে মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে।
ইশরাক হোসেনের শপথ নিয়ে সরকারের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ
বৈঠকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানো নিয়ে সরকারের ‘গড়িমসি’। আদালতের রায় এবং নির্বাচন কমিশনের গেজেট প্রকাশের পরও এখনও তাকে শপথ করানো হয়নি, যা নিয়ে অসন্তোষ জানায় বিএনপি।
দলটির নেতারা বলেন, দেশের আইন অনুযায়ী এবং গেজেট প্রকাশের পর মেয়রের দায়িত্ব পালনে কোনো বাধা নেই। সরকারের এ ধরনের আচরণ স্পষ্টভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ। বিএনপি মনে করে, ইশরাককে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া এখন সময়ের দাবি।
দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইশরাক হোসেনের শপথ বাস্তবায়নের দাবিতে কর্মী-সমর্থকদের যেসব বিক্ষোভ হচ্ছে, তা একেবারেই যুক্তিসংগত এবং গণতান্ত্রিক। ঢাকাবাসীর স্বার্থে একটি বৈধ মেয়রকে দায়িত্ব পালনের সুযোগ না দেওয়াকে তারা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছে।
আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়েও আলোচনা
বৈঠকে আরও আলোচনা হয় যে, বর্তমান পরিস্থিতিতে সরাসরি রাজপথে নামা কতটা বাস্তবসম্মত। নেতারা জানান, সরকারের ওপর কিছুটা সময় ও চাপ প্রয়োগের সুযোগ এখনো বাকি রয়েছে। তবে প্রস্তুতি শুরু করতে হবে এখন থেকেই। কেননা, সময় ফুরিয়ে গেলে আর বসে থাকার সুযোগ থাকবে না।
বিএনপি মনে করে, নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। জনগণের দাবিকে কেন্দ্র করে একটি বড় আন্দোলন গড়ে তুলতে পারলেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে।
সবমিলিয়ে, দলটি এখনো আলোচনার সুযোগ রেখে মাঠ পর্যায়ে সংগঠনের শক্তি গুছিয়ে নিচ্ছে, যাতে প্রয়োজন হলে দৃঢ় অবস্থান নেওয়া যায়।
#বিএনপি #নির্বাচন২০২৫ #গণতন্ত্র #ইশরাক_হোসেন #ঢাকা_দক্ষিণ #বাংলাদেশরাজনীতি #আন্দোলন
Post a Comment