কিশোরগঞ্জে বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলার পর গোসলে নেমে পানিতে ডুবে প্রাণ হারিয়েছে অষ্টম শ্রেণির মাদ্রাসা শিক্ষার্থী মাআজ ইবনে হোসেন (১৫)। শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলে কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের পাশে একটি পুকুরে এ দুঃখজনক ঘটনা ঘটে।
নিহত মাআজ ইবনে হোসেনের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার চরকাওনা গ্রামে। সে মোফাজ্জল হোসেনের ছোট ছেলে। মাআজ কিশোরগঞ্জ শহরের পুরান থানা এলাকায় মা-বাবার সঙ্গে একটি ভাড়া বাসায় থাকত এবং স্থানীয় আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়া মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছিল।
পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকালে বৃষ্টির মধ্যে বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলায় অংশ নেয় মাআজ। ফুটবল খেলার পর দুপুরের দিকে বন্ধুদের সঙ্গে সে রেলওয়ে পুকুরে গোসল করতে নামে। কিন্তু গোসলের একপর্যায়ে সে পানির নিচে তলিয়ে যায় এবং নিখোঁজ হয়।
দীর্ঘক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর স্থানীয়রা বিষয়টি ফায়ার সার্ভিসকে জানায়। পরে বিকেল ৫টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযানে নামে এবং অনেক চেষ্টা শেষে পুকুর থেকে মাআজের নিথর দেহ উদ্ধার করে।
কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মরদেহ উদ্ধার করে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।
এ দুর্ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সহপাঠী, শিক্ষক ও প্রতিবেশীরা সবাই শোকাহত এবং তার অকাল মৃত্যুতে কেউই বিশ্বাস করতে পারছেন না যে, সদা হাস্যোজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত এই কিশোর আর নেই।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মাআজ ছিল ভদ্র ও মেধাবী ছাত্র। তার আচরণে কেউ কখনো বিরক্ত হয়নি। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা এই কিশোরের এমন করুণ মৃত্যু মাদ্রাসা ও এলাকাবাসীর হৃদয়ে গভীর দাগ কেটেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়াতে শিশু-কিশোরদের জলাশয়ের আশপাশে নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন। সাঁতার না জানলে তাদের একা পুকুরে গোসল করতে দেওয়া উচিত নয়। তদুপরি স্থানীয় প্রশাসনের তরফ থেকেও ঝুঁকিপূর্ণ পুকুর ও জলাশয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার তাগিদ দিয়েছেন সচেতন মহল।
এই মৃত্যু শুধুমাত্র একটি পরিবারের নয়, বরং গোটা সমাজের জন্যই এক সতর্কবার্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিশু-কিশোরদের খেলাধুলার নিরাপত্তা ও সচেতনতা বাড়াতে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।#কিশোরগঞ্জ #পুকুরে_ডুবে_মৃত্যু #মাদ্রাসা_ছাত্র #শোকাবহ_ঘটনা #নিরাপত্তা_সচেতনতা #বাংলাদেশ_সংবাদ
Post a Comment