বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সংস্কৃতির প্রতীক হয়ে উঠতে যাচ্ছে নতুন ডিজাইনের ব্যাংক নোট। বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ঈদুল আজহার আগেই বাজারে আসছে নতুন ২০, ৫০ ও ১০০ টাকার নোট, যেখানে ফুটে উঠবে দেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য। এই নোটগুলোতে কোনো ব্যক্তির ছবি থাকবে না; বরং তুলে ধরা হবে দেশের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ও দৃশ্যাবলি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বরাতে জানা গেছে, নতুন নোটগুলোতে প্রথমবারের মতো কোনো ব্যক্তিচিত্র না রেখে শুধুই দেশের পরিচয় ও সংস্কৃতিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে আসছে ২০, ৫০ ও ১০০ টাকার নোট—যা জুনের ২ বা ৩ তারিখের মধ্যেই বাজারে ছাড়া হবে। পর্যায়ক্রমে অন্য মূল্যমানের নোটও বাজারে আসবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান হাবিব মনসুর এক অনুষ্ঠানে বলেন, “নতুন নোটে আমরা দেশের প্রকৃতি, ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে বিশেষভাবে তুলে ধরেছি।” এছাড়া ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, “নোটগুলোতে কোনো ব্যক্তির ছবি নেই। এসব ডিজাইনে দেশের ঐতিহ্য ও বৈচিত্র্য উঠে এসেছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়, মসজিদ, বাঘ, হরিণ, স্মৃতিসৌধ, সংসদ ভবনসহ নানা প্রতীক যুক্ত করা হয়েছে নোটের দুই পাশে, যাতে মানুষের মাঝে বাংলাদেশের গর্বিত পরিচয় তুলে ধরা যায়। এমনকি, নোট বাজারে ছাড়ার আগে এটি দেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদর্শন করা হবে বলেও জানা গেছে।
নতুন নোটের বৈশিষ্ট্যগুলো সংক্ষেপে:
১০০ টাকার নোট:
এক পাশে বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদ এবং রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
অপর পাশে সুন্দরবনের দৃশ্য—বাঘ ও হরিণের সঙ্গে বাংলাদেশের ম্যানগ্রোভ বন।
২০০ টাকার নোট (হালকা হলুদ রঙে):
এক পাশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্য।
অপর পাশে ধর্মীয় সম্প্রীতির চিত্র—মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উপস্থাপনা।
মাঝখানে সবুজের মধ্যে বাংলাদেশের মানচিত্র।
৫০০ টাকার নোট:
এক পাশে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।
অপর পাশে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত, সুপ্রিম কোর্ট।
১০০০ টাকার নোট:
সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ, স্বাধীনতার প্রতীক।
অপর পাশে জাতীয় সংসদ ভবন, দেশের গণতন্ত্রের প্রতীক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই উদ্যোগ সাধারণ মানুষের মধ্যে ইতিমধ্যেই কৌতূহল ও আগ্রহের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলছেন, ‘অবশেষে মুদ্রায় উঠে আসছে আমাদের পরিচয় ও সংস্কৃতি।’ অর্থনীতিবিদরাও বলছেন, এই উদ্যোগ দেশের ভাবমূর্তি ও সাংস্কৃতিক আত্মপরিচয় বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে সহায়ক হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র জানান, ঈদের আগেই নতুন ২০, ৫০ ও ১০০ টাকার নোট সাধারণ মানুষের হাতে পৌঁছে যাবে। ছাপার কাজ চলছে পুরোদমে। এরপর ধাপে ধাপে অন্যান্য মূল্যমানের নোটও বাজারে ছাড়া হবে।
#বাংলাদেশব্যাংক #নতুননোট২০২৫ #ঐতিহ্য_ও_সংস্কৃতি #বাংলাদেশেরগর্ব #টাকারনতুনচেহারা
Post a Comment