কিশোরগঞ্জে দুই দশক পর জামায়াতের কর্মী সম্মেলন, লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতির প্রস্তুতি

দীর্ঘ দুই দশক পর কিশোরগঞ্জে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে ২৯ মে বৃহস্পতিবার সকালে জেলা পাবলিক লাইব্রেরির মিলনায়তনে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটির জেলা শাখার প্রচার বিভাগ।

সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও কিশোরগঞ্জ জেলা আমির অধ্যাপক রমজান আলী জানান, আগামী ৩১ মে কিশোরগঞ্জ পুরাতন স্টেডিয়ামে বহুল প্রতীক্ষিত এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি জানান, এ সম্মেলনে লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতি প্রত্যাশা করা হচ্ছে এবং তা ঘিরে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ ও উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে।

অধ্যাপক রমজান আলী বলেন, "গত ২০ বছর ধরে আমরা নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও সংগঠনের কার্যক্রম চালিয়ে গেছি। মামলা, হামলা, খুন ও গুমের মতো ঘটনাগুলোর মুখেও আমরা মাঠ ছাড়িনি। এবার আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সম্মেলন আয়োজন করতে চাই। নিরাপত্তার জন্য আমাদের স্বেচ্ছাসেবক টিম কাজ করবে এবং প্রশাসন থেকেও সহযোগিতা পাচ্ছি। আমরা একটি মানবিক, শান্তিপূর্ণ ও সন্ত্রাসমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি, এই সম্মেলন সেই পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।"

কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতি

এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। এছাড়াও উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও প্রচার সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি এবং ময়মনসিংহ অঞ্চলের পরিচালক ড. মাওলানা মো. ছামিউল হক ফারুকী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা নাজমুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য ডা. কর্নেল (অব.) জেহাদ খান, সাবেক জেলা নায়েবে আমির মোসাদ্দেক আলী ভূইয়া, ঢাকা মহানগর উত্তরের মজলিসে শুরা সদস্য অ্যাডভোকেট রোকন রেজা, জেলা প্রচার সেক্রেটারি শামসুল আলম সেলিম, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি খালেদ হাসান জুম্মন, সদর উপজেলা জামায়াতের আমির কারী নজরুল ইসলাম এবং জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি হাসান আল মামুন।

নেতারা জানান, দীর্ঘ সময় পর এমন আয়োজনের মাধ্যমে কর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্যম সৃষ্টি হবে। এতে শুধু সাংগঠনিক কার্যক্রমই নয়, জনগণের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন ও ভবিষ্যতের কর্মপরিকল্পনাও তুলে ধরা হবে।

নিরাপত্তা ও সহযোগিতা

আয়োজকরা জানান, সম্মেলনটি হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে স্বেচ্ছাসেবকদের একটি প্রশিক্ষিত দল কাজ করবে এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে প্রশাসনের সহায়তা নেওয়া হবে। সম্মেলন ঘিরে এলাকায় ইতোমধ্যেই ব্যানার, ফেস্টুন ও প্রচারণা চালানো হচ্ছে, যা স্থানীয়দের দৃষ্টি কেড়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষণ

বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াতে ইসলামীর এই সম্মেলন কেবল একটি সাংগঠনিক কর্মসূচিই নয়, বরং এটি দলটির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ফের সক্রিয় হওয়ার একটি ইঙ্গিত বহন করে। সাম্প্রতিক সময়ে দলটি মাঠ পর্যায়ে যে তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে, তার একটি বড় প্রকাশ হতে যাচ্ছে এই সম্মেলন।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জামায়াতে ইসলামীর এমন উদ্যোগে বিভিন্ন মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকার পর এ সম্মেলনের মাধ্যমে দলটি নতুন করে সক্রিয় হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।#জামায়াতসম্মেলন #কিশোরগঞ্জ #বাংলাদেশরাজনীতি #জামায়াতেইসলামী #রাজনৈতিকউদ্যোগ #সম্মেলন২০২৫ #BangladeshPolitics #JamaatEIslami #KishoreganjNews

Post a Comment

Previous Post Next Post